
ধর্ম ডেস্ক | ৩১ জুলাই ২০২৪
ইসলামী জীবনবিধানে ঘুমকে ইবাদতে পরিণত করার সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর শেখানো আমলগুলো অনুসরণ করলে প্রতিটি নিদ্রাই হয়ে ওঠে সওয়াবের উপাখ্যান। বিশেষজ্ঞ আলেমদের মতে, নিম্নোক্ত ৫ আমল ঘুমের পূর্বক্ষণে আদায় করলে তা সুন্নতের সৌন্দর্য বজায় রাখার পাশাপাশি শারীরিক-আধ্যাত্মিক সুরক্ষা নিশ্চিত করে।
১. বিসমিকের দোয়া পাঠ
প্রত্যেক মুসলিমের জন্য ঘুমানোর আগে ছোট্ট এই দোয়া পাঠ জরুরি:
“আল্লাহুম্মা বিসমিকা আমুতু ওয়া আহ্ইয়া”
(অর্থ: হে আল্লাহ! তোমার নামেই আমি মৃত্যুবরণ করি ও তোমারই নামে জীবিত হই)
হাদিস: “যে ব্যক্তি শোয়ার সময় আল্লাহর নাম নেয় না, তার জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে লাঞ্ছনা নেমে আসবে।” (আবু দাউদ: ৪৮৫৬)
২. মু’আওয়িজাত তিলাওয়াত ও ফুঁ দেওয়া
হযরত আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন: রাসূলুল্লাহ (সা.) প্রতি রাতে তিনটি সূরা (ইখলাস, ফালাক, নাস) পড়ে হাতে ফুঁ দিয়ে সমস্ত শরীরে মাসেহ করতেন। এই আমল তিনবার পুনরাবৃত্তি করতেন। (বুখারি: ৫০১৭)
৩. আয়াতুল কুরসি তিলাওয়াত
ঘুমের আগে আয়াতুল কুরসি পড়লে আল্লাহর পক্ষ থেকে রক্ষাকারী নিযুক্ত হন:
“যে ব্যক্তি শয্যায় যাওয়ার সময় আয়াতুল কুরসি পাঠ করে, আল্লাহ তাআলা তার জন্য একজন রক্ষক প্রেরণ করেন। সে ভোর পর্যন্ত শয়তান থেকে নিরাপদে থাকে।” (বুখারি: ২৩১১)
৪. সূরা বাকারার শেষ ২ আয়াত পাঠ
রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন:
“সূরা বাকারার শেষ দুই আয়াত (আমানার রাসুল…) যে ব্যক্তি রাতে পাঠ করবে, তা তার জন্য যথেষ্ট হবে।” (বুখারি: ৫০৪০)
(ব্যাখ্যা: ‘কাফি’ শব্দ দ্বারা রাতের ইবাদত বা যেকোনো বিপদ থেকে সুরক্ষা বোঝানো হয়েছে)
৫. সূরা মুলক তিলাওয়াত
এই সূরার বিশেষ ফজিলত প্রসঙ্গে নবীজি (সা.) বলেন:
“কুরআনে ৩০ আয়াতবিশিষ্ট একটি সূরা আছে, যা কারো জন্য সুপারিশ করলে তাকে ক্ষমা করা হয়। তা হলো ‘তাবারাকাল্লাজি বিয়াদিহিল মুলক’ (সূরা আল-মুলক)।” (তিরমিজি: ২৮৯১)
আধ্যাত্মিক ও শারীরিক প্রভাব
ইসলামিক স্কলারদের মতে, এই আমলগুলোর মাধ্যমে:
✅ শয়তানের প্রভাব থেকে সুরক্ষা লাভ
✅ রাতের নেক আমলের সওয়াব অর্জন
✅ মানসিক প্রশান্তি ও নিরাপদ ঘুম নিশ্চিত
✅ মহান আল্লাহর সাথে সম্পর্কের উন্নয়ন
পরামর্শ: আলেমরা নির্দেশ দেন, সব আমল একসাথে পড়া সম্ভব না হলে যেকোনো একটি নিয়মিত আদায় করলেও ফজিলত মিলবে। তবে সূরা মুলক ও আয়াতুল কুরসির আমল সহজ হওয়ায় সেগুলো নিয়মিত চালু রাখা উচিত।
সূত্র: সহিহ বুখারি, আবু দাউদ, তিরমিজি, কুরআন মাজিদ।