
তখন স্বৈরাচারী শাসনের ভয়াল আগ্রাসন চারিদিকে। মানুষের মুখে নেই ভোটাধিকারের কথা, তারুণ্য বন্দি বিরাজনীতিকরণের চক্রে। চাকরি পাওয়ার আশায় ক্ষমতাসীনদের তোষামোদ তখন হয়ে উঠেছে নিত্যদিনের বাস্তবতা। কিন্তু এই হতাশার প্রেক্ষাপটেও দেশের হাজারো অধিকার সচেতন যুবকের মিছিলে যোগ দেন তিন তরুণ।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগের ছাত্র সায়মন, রাফি ও মিশু।
ডিপার্টমেন্টের সেমিনার রুম থেকে শুরু করে টং দোকানের চায়ের আড্ডা – যেখানেই হোক, আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু ছিল একটি বিষয়: কিভাবে নিজের অধিকার ফিরিয়ে আনা যায়, কিভাবে দেশের মানুষের ভোটাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা যায়। পর্যায়ক্রমে তারা যোগ দেন স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে প্রতিবাদের পতাকা হাতে থাকা সংগঠন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলে।
এরপর শুরু হয় সংগ্রামের নতুন অধ্যায়। ফ্যাসিবাদী শাসনের রক্তচক্ষু, হামলা, হুমকি-ধমকি কোনো কিছুই পিছু হটাতে পারেনি এই তিন বন্ধুকে। তারা প্রমাণ করেছেন, সঠিক আদর্শ আর অটল মনোবল থাকলে প্রতিবাদের মশাল নিভে যায় না, সাফল্য একদিন ধরা দেয়।
আজ সেই তিন বন্ধু সায়মন, রাফি ও মিশু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি হলের নেতৃত্বে অধিষ্ঠিত হয়েছেন। ব্যক্তিগত অর্জনের চেয়েও বড় তাদের কাছে এটাই যে, তারা এই প্রজন্মকে দেখিয়ে দিতে পেরেছেন রাজনীতি মানে তোষামোদি নয়, বরং মানুষের অধিকার আদায়ে লড়াই জারি রাখা, কন্ঠ জারি রাখা অন্যায়ের বিরুদ্ধে। তারুণ্য চাইলে সব পারে।
তিন বন্ধুর এই সাফল্যের ব্যাপারে জানতে চাইলে মাস্টারদা সূর্যসেন হল ছাত্রদলের সদস্য সচিব আবিদুর রহমান মিশু জানান, “বন্ধুত্ব থেকেই আমাদের রাজনৈতিক পথচলা শুরু। দূর্দিনে আমরা একে অপরকে শুধু সাহসই দিইনি, বরং একে অপরকে আগলে রেখেছি স্বৈরাচারীর ভয়াল থাবা থেকে।”
স্যার এ এফ রহমান হলের আহবায়ক ফেরদৌস সিদ্দীক সায়মন বলেন, ‘ পড়াশোনার টেবিল থেকে রাজপথ আমরা একসাথে লড়ে গেছি, আগামীতেও দেশের প্রয়োজনে আমরা হাতে হাত রেখে লড়াই করতে প্রস্তুতি গ্রহণ করছি।”
তিন বন্ধুর এই পথচলা শুধু তিনজনেরই সাফল্যের নয় বরং একটি প্রজন্মের প্রতিবাদ, প্রতিরোধের প্রতীক।